যশোরে শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া মওকুফের দাবিতে স্মারকলিপি
Share
![](https://arewacloud.com/wp-content/uploads/2020/07/preobroto-750x394.jpg)
প্রিয়ব্রত ধর,ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি:
শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া মওকুফের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী যশোর জেলা শাখা। এ দাবিতে যশোর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সংগঠনটি
মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) ছাত্র মৈত্রীর জেলা কমিটির দপ্তর সম্পাদক শাহিন হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় মেস ভাড়া মওকুফ, বিনামূল্যে উচ্চগতির ইন্টারনেট প্যাকেজ প্রদান এবং স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার কেনার জন্য সহজ শর্তে সুদমুক্ত ব্যাংক লোন প্রদানে সরকারি প্রজ্ঞাপনের দাবিতে যশোর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরও স্মারকলিপি দেন বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
ছাত্র মৈত্রীর জেলা সভাপতি শ্যামল শর্মা ও সহ- সাধারণ সম্পাদক রবি সরকার স্বাক্ষরিত প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া স্মারক লিপিতে বলা হয়, করোনা ভাইরাস সমগ্র দেশকে স্থবির করে দিয়েছে। এমন দুর্যোগ মোকাবিলায় আপনার প্রচেষ্টার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। কিন্তু কিছু কথা থেকেই যায়। করোনাকালীন সময়ে দেশের প্রায় সব শ্রেণিপেশার মানুষের স্বাভাবিক আয় তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে। ইতোমধ্যে অসংখ্য মানুষ হারিয়েছে তার পেশা। দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষই হিমসিম খাচ্ছে তাদের পরিবারের খরচ চালাতে। আর পরিবারের অর্থনৈতিক মন্দার পরোক্ষ প্রভাব পড়েছে শিক্ষার্থীদের ওপর।
এতে আরও বলা হয়, সারাদেশে বিশেষ করে যশোরসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে শিক্ষার তাগিদেই এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব ছাত্রাবাস বা ছাত্রীনিবাস না থাকায়; আর থাকলেও আসন সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ায় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বাসায় মেস করে ভাড়া থাকতে হয়। বলার অপেক্ষা রাখে না, এসব শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই আসে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও দরিদ্র পরিবার থেকে। এসব দরিদ্র শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ তাদের পড়ালেখা ও থাকা-খাওয়ার খরচ বহন করে টিউশনি করিয়ে। করোনাকালীন সময়ে তাদের সেই টিউশনিও বন্ধ।
অতীতে অনেক পরিবারের পক্ষে তাদের সন্তানের পড়াশুনা ও থাকা-খাওয়ার খরচ বহন করার সীমিত সক্ষমতা থাকলেও বর্তমান সময়ে করোনার কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক অভাবে সেই পরিবারগুলোকেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। এমন সময়ে একদিকে শিক্ষা ব্যয়, অন্যদিকে আবাসন ব্যয় বহন করা দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে। শিক্ষার্থীদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে ইন্টারনেটের বাড়তি খরচ। কিন্তু অর্থনৈতিক সংকট, দেশের সকল স্থানে উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধা না থাকা, অর্থাভাবের কারণে স্মার্টফোন/ল্যাপটপ/কম্পিউটার কিনতে না পারার কারণে এই অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে রয়ে গেছে ৪০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী। ফলে চলমান শিক্ষা বৈষম্য আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা পরবর্তীতে সামাজিক বৈষম্যকেও ত্বরান্বিত করবে। এটা কখনোই কাম্য নয়।
আজকে যারা শিক্ষার্থী তারাই দেশের ভবিষ্যৎ শ্রমবাজার সমৃদ্ধ করবে, নেতৃত্ব দেবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। সচল রাখবে দেশের অর্থনীতির চাকা, জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে রাখবে অগ্রনী ভূমিকা। কিন্তু তার জন্য আমরা যারা শিক্ষার্থী তাদের দিকে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে রাষ্ট্র ও সরকারকে। উপরোক্ত বক্তব্য বিবেচনায় নিয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট প্রধানমন্ত্রী বরাবর দেয়া স্মারকলিপিতে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমকে সফল ও সার্থক করতে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধা প্রদান, শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি সহায়তা প্রদান এবং প্রয়োজনে শতভাগ শিক্ষার্থীকে অনলাইন শিক্ষার আওতায় আনতে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটার ক্রয়ে তাদের জন্য সহজ শর্তে সুদমুক্ত ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করতে সরকারী প্রজ্ঞাপনের দাবি জানানো হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্র মৈত্রী কেন্দ্রীয় নেতা রাশেদ খান। জেলা নেতা সুবত বিশ্বাস, মার্ক শুভ প্রমুখ।