মণিরামপুরে রসুনের বাম্পার ফলন কিন্তু মূল্য নিয়ে চাষিরা হতাশায়
Share
![](https://arewacloud.com/wp-content/uploads/2020/03/Monirampur-Picture-15.03.2020-1.jpg)
জি, এম ফারুক আলম, মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
আবহাওয়া ভাল (অনুকুল) তাই ইবার রসুনের বাম্পার ফলন হইয়েছে। ফলন ভাল হলেও হাটে (বাজারে) রসুনের মূল্য কম থাকাই মনটা ভাল নেই। তারপরও যা হয়েছে তাতে আমরা খুশি। লাগানোর খরচ বাদ দিয়ে ভালই লাভ না হলেও লোকসান হবে না। কথাগুলো বলছিলেন যশোরের মণিরামপুর উপজেলার খালিয়া গ্রমের রসুন চাষি সিদ্দিকুর রহমান। শুধু সিদ্দিক নন। এ গ্রামের অধিকাংশ কৃষকই অনেক বছর ধরে রসুনের চাষ করে আসছেন।
খালিয়া গ্রামের রসুন স্বাদে, আকৃতিতে আলাদা হওযায় স্থানীয় বাজারসহ সারা দেশেই খালিয়ার রসুনের কদর রয়েছে। ইতোমধ্যে খালিয়া গ্রাম ‘রসুন গ্রাম’ নামে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। বাজারে খালিয়ার রসুনের দামও একটু বেশি। সরকারি-বেসরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে রসুন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ রাখতে পারবে বলে অনেকেই মনে করেন। রসুনের বৈজ্ঞানিক নাম ‘অলিয়াম সেটিভাম’। এটি সাধারননত মসলা জাতীয় ফসল। তবে আচার ও মুখরোচক খাবারে রসুনের ব্যবহার হয়ে থাকে।
সরেজমিন খালিয়ার মাঠে গেলে রসুন তোলা চিত্র চোখে পড়ে। গ্রামে এখন রসুন তোলার ধুম পড়েছে। মাত্র তিন মাসের ফসল রসুন চাষে অধিক লাভ হওয়ায় দিনকে দিন রসুন চাঝে ঝুঁকে পড়েছে কৃষক। কথা হয় রসুন চাষী গৌতম সরকার, আব্দুর রাজ্জাক, মোকাররম হোসেন, আবুল কালামসহ একাধিক কৃষকের সাথে। আব্দুর রাজ্জাক এবার দুই বিঘা জমিতে রসুনের চাষ করেছেন। এবার বাম্পার ফলন হওয়ায় বিঘা প্রতি ৬০ থেকে ৭০ মন রসুন পাবেন বলে তিনি আশা করছেন। বাজারে কেজি প্রতি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে রসুন। যা কিছু দিন আগেও প্রায় ১শ’টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। তারপরও উৎপাদন খরচ বাদে বিঘা প্রতি ১ লাখ টাকা লাভ হবে বলে তিনি আমা করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৯৫ হেক্টর জমিতে রসুনের চাষ হয়েছে। এরমধ্যে শুধু খালিয়া গ্রামেই ১’শ বিঘা জমিতে রসুনের চাষ হয়েছে। এছাড়া হানুয়ার, চন্ডিপুর, হেলাঞ্চী, হরিহরনগরসহ কয়েক গ্রামে রসুনের চাষ হয়েছে। রাজগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ বলেন, এ অঞ্চলের রসুন চাষীরা সরকারি-কেসরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে বিদেশে রপ্তানি করে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরক কুমার সরকার জানান, মসলা আচার ও মুখরোচক খাবার তৈরীতে রসুনের ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এছাড়া রসুনে আমিষ, প্রচুর ক্যালসিয়াম ও সামান্য ভিটামিন ‘সি’ থাকায় কৃমি নাশক, হজমে সহায়তা, প্রসাবে বেগ বৃদ্ধি, শ্বাসনালীর মিউকাস বের করে দেয়া, চুল পাকানো কমানো, শরীরের কোলেস্টেরল লেভেল কমানোসহ এ্যাজমা রোগীর উপশম দেয়।