LOADING

Type to search

মণিরামপুরে ব্রাক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লোনের টাকা না দেওয়ায় এক নারীকে লাঞ্চনার অভিযোগ

যশোর

মণিরামপুরে ব্রাক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লোনের টাকা না দেওয়ায় এক নারীকে লাঞ্চনার অভিযোগ

Share

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
যশোরের মণিরামপুরে ব্র্যাক ব্যাংক থেকে লোনকৃত টাকার সুদ দিতে দেরি হওয়ায় সুব্রত দেবনাথ নামের এক ঋনগ্রহিতার পরিববারের সদস্যদের লাঞ্চিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্র্যাকের (লিগ্যাল) শাখার কর্মকর্তা বাহারুল ইসলাম নামের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। বাড়ি গিয়ে ডেকে না পাওয়ায় পূজারত অবস্থায় থাকা ঋনগ্রহিতা সুব্রত দেবনাথের বাবা অজিত দেবনাথকে পূজার ঘর থেকে বের করে এনে মারতে উদ্যত হন বাহারুল ইসলাম। বাঁধা দিতে এগিয়ে আসলে সুব্রত দেবনাথের স্ত্রী শীলা দেবনাথকেও অশ্লীল ভাষায় গালি-গালাজসহ তাকেও মারতে তেড়ে যান তিনি (বাহারুল)। এ ঘটনায় বাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন সুব্রত দেবনাথ। অবশ্য ব্র্যাকের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে মঙ্গলবার বাহারুল ইসলামকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।
লোনের টাকার নিয়মিত কিস্তি দেয়াকালে সড়ক দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাতপ্রপাপ্ত হয়ে সুব্রত ভারতে চিকিৎসা নিয়ে সর্বশান্ত হন। ভিটেবাড়ি বিক্রিকৃত ও প্রধানমন্ত্রীর ত্রানতহবিল থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে আসল টাকা পরিশোধ করলেও সুদের টাকার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের রোষানলে পড়েন তিনি।
সরেজমিন বাড়িতে গেলে কথা হয় সুব্রত দেবনাথের স্ত্রী শীলা দেবনাথের সাথে। তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাড়িতে আসেন ব্র্যাকের (লিগ্যাল) শাখার কর্মকর্তা বাহারুল ইসলাম। এসেই লোনের সুদের টাকার জন্য বাবু মশাই (শ্বশুর) অজিত দেবনাথকে উত্তেজিন কন্ঠে ডাকেন। বাবু পূজার ঘরে থাকায় আসতে দেরি হওয়ায় পূজার ঘরের দরজায় লাথি মেরে খুলে বাবুকে মারতে তেড়ে যান বাহারুল ইসলাম। এসময় তিনি বাঁধা দিতে গেলে অশ্লীল ভাষায় গালি-গালাজ দেয়াসহ তাকেও কয়েকবার মারতে তেড়ে যান। অপমান সইতে না পেরে বাবু মশাই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেন বলেন, চিকিৎসা করাতে গিয়ে সুব্রত দেবনাথের পরিবার নিঃশ্ব হয়ে গেছে। তার চিকিৎসার জন্য গ্রামবাসির কাছ থেকে টাকা তোলা হয়েছিলো। সুব্রত দেবনাথ বলেন, ২০১২ সালের দিকে ব্র্যাক ব্যাংক মণিরামপুর শাখা হতে ৪ লাখ টাকা ঋণ নেয়ার পর ১ লাখ ৩১ হাজার টাকা শোধ হওয়ার পরে সড়ক দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হন। দেশে চিকিৎসায় ভাল না হওয়ায় ভারতের কলকাতাসহ ভেলোরে চিকিৎসা নেন। সেখানে মাথায় দুইটি অস্ত্রাপচার করতে হয়। এতে তার পৈত্রিক জমি বিক্রি ও আত্বীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধার দেনা করে আর্থিকভাবে নিঃশ্ব হয়ে পড়েন।
এরমধ্যে ব্র্যাক ব্যাংকের কিস্তির টাকা দিতে না পারায় সুব্রত দেবনাথের নামে মামলা করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু টাকা পরিশোধের কোন উপায় না থাকলেও সুদ মওকুপের শর্তে পৈত্রিক ভিটার এক অংশ বিক্রিকৃত ও প্রধানমন্ত্রীর ত্রানতহবিল থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে ঋণের আসল টাকার ৩লাখ ৯৪ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। বাকি ৬ হাজার টাকা দিতে গেলে তারা (ব্র্যাক ব্যাংক) নেয়নি। তার বেকে বসেন। সুদসহ আরো ১ লাখ ৩১ হাজার টাকা দিলে মামলা প্রত্যাহার করা হবে, অন্যথায় থানা পুলিশের হুমকি দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে জানতে বাহারুল ইসলামের ব্যবহৃত (০১৭৩০৭০৩২৭৩) মুঠোফোনে বার বার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। ব্যাকের স্পেশাল এ্যাসেট ম্যানেজসেন্ট শাখার খুলনা বিভাগীয় টেরিটারি ম্যানেজার গাজী সালাউদ্দীন জানান, ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে বাহারুল ইসলামকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *