ভবদহের অবস্থা ভয়াবহ;আগামী বর্ষা মৌসুমে দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশংকা
Share
![](https://arewacloud.com/wp-content/uploads/2020/03/pic-2.jpg)
স্টাফ রিপোটার-ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রনজিত বাওয়ালি এক বিবৃতিতে বলেন, ভবদহ জনপদের মণিরামপুর, কেশবপুর, অভয়নগর, ডুমুরিয়া এবং যশোর সদর উপজেলার দুই শতাধিক গ্রাম ও প্রায় ১০ লাখ মানুষ ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি। এই জনপদের বাড়ী-ঘর, স্কুল-কলেজ, রাস্তা-ঘাট, মসজিদ-মন্দির, কবরস্থান, ফসলের মাঠ পানির তলে নিমজ্জিত হবে। হাজার হাজার পরিবারকে উদ্বাস্তু হয়ে এলাকাছাড়া হতে হবে।
গত ১লা মার্চ ভবদহের স্লুইচ গেটের উজান ও ভাটির এলাকা পরিদর্শনকালে দেখা গেছে- ভবদহ স্লুইজ গেটের উত্তরে ৬ কিলোমিটার পর্যন্ত পলি ভরাট হয়ে গেছে। ২১ ভেন্টের গেটের পাল্লাসমূহ পলির নিচে, গেটের উত্তরে যেখানে কমপক্ষে ১০ বার স্কেটেভটর দ্বারা খনন কাজ করা হয়েছে সেখানে মাত্র দুই হাত পানি। গেটের দক্ষিণ পার্শ্বে মাত্র আধা হাত পানি, সেখানে কাঁদা দিয়ে, বাঁধ দিয়ে ঘুনি পেতে মাছ ধরছে। ৯ ভেন্টের উত্তর পার্শ্বে পূর্ণ নদী সংযোগ পর্যন্ত ধু-ধু খেলার মাঠ। দক্ষিণে নদী পর্যন্ত পলি ভরাট। ভবদহ কলেজ মোড়ে মাত্র ৬ ইঞ্চি পানি। কপালিয়া ব্রিজ থেকে ৮ ভেন্ট পর্যন্ত ১ থেকে দেড় হাত পানি। বাকী নদী পলি ভরাট। ৮ ভেন্টের উত্তরে কোন জোয়ার ভাটা চলে না। ষোলাগাতী পর্যন্ত দেড় থেকে দুই হাত পানি। খর্নিয়া ব্রিজ পর্যন্ত দুই থেকে হাত পানি। বারোয়াড়ী মোহনীর অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
আমরা বলেছিলাম, গেট দিয়ে জোয়ার ভাটা চালিয়ে অথবা যন্ত্র দিয়ে পলি কেটে নদীর নাব্যতা রক্ষা করা যাবে না। বিল কপালিয়ায় টিআরএম নাহলে ৫০/৬০ কিলোমিটার বারোয়াড়ীর মোহনা পর্যন্ত ভরাট হয়ে যাবে। এই বক্তব্যে তখন কর্ণপাত করা হয়নি।
জগণের দাবী ও জাতীয় কর্মশালায় পর্যায়ক্রমে বিলে বিলে প্রকল্পের গৃহিত প্রস্তাব বাতিল করা হয়েছে।
একথা সবার জনা যে, ভবদহকে দীর্ঘস্থায়ী ব্যবসা কেন্দ্র রাখার জন্য একটি লুটেরা কু-চক্রি মহল প্রকল্প নস্যাৎ করার লাগাতার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিভ্রান্ত করছে। গত ৪ বছরে মাটি কাটার নামে কোটি কোটি টাকা অপচয় ও বিশেষ মহলকে লুটপাটের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। তার পরিণতিতে আজ এই মহাবিপর্যয়কর পরিস্থিতি।
সম্প্রতি ৮০৭ কোটি ৯২ লাখ টাকার যে প্রস্তাব গ্রহণ করার উদোগ নেয়া হয়েছে- সেক্ষেত্রে ভুক্তভোগী জনপদের কোন মতামত গ্রহণ করা হয়নি- যা প্রকল্প গ্রহণের নীতিমালা পরিপন্থি। আমরা অবলিম্বে এই প্রকল্প প্রস্তাব বাতিল করে এই মুহূর্তে বিল কপালিয়ায় টি আর এম বাস্তাবয়ন করার দাবি জানাচ্ছি।
ঐ জনপদকে জিম্মি করে দুর্নীতি ও লুটপাটের সাথে জড়িতদের বিচারের দাবি করছি। এ দাবী বাস্তবায়ন না হলে জনপদ রক্ষায় দুর্বার গণ আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া বিকল্প পথ খোলা নেই।