LOADING

Type to search

চৌগাছায় জোর করে স্ত্রী’র মুখে বিষ ঢেলে হত্যার অভিযোগ

যশোর

চৌগাছায় জোর করে স্ত্রী’র মুখে বিষ ঢেলে হত্যার অভিযোগ

Share

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি
যশোরের চৌগাছায় স্বামীর অত্যাচারে লাইলাতুল জান্নাত (৩৪) নামে দুই সন্তানের জননী মাত্র ২ মাসের কোলের সন্তান রেখে আগাছা নাশক পাউডার খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার ওই গৃহবধূ শ^শুর বাড়িতে বিষ ক্রিয়ায় আক্রান্ত হয় এবং শুক্রবার রাতে সে মারা যায়। তার পিতার অভিযোগ মেয়ের মুখে বিষ ঢেলে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার এ ঘটনায় থানায় হত্যার অভিযোগ করা হলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
ওই গৃহবধূ উপজেলার স্বরূপদাহ ইউনিয়নের তিলকপুর গ্রামের এনামুল কবির ইসমাইলের স্ত্রী এবং নড়াইল জেলার মহেশখোলা গ্রামের অ্যাডভোকেট তাইয়েব আলীর কন্যা।

জানা গেছে,বৃহস্পতিবার ইফতারের পর জান্নাত ঘরের দরজা বন্ধ করে বিষ পান করে(আগাছা নাশক) ।রাতেই তাকে চৌগাছা হাসপাতালে নিয়েযাওয়া হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

তাবে জান্নাতের পিতা অ্যাডভোকেট তাইয়েব আলী তার মেয়েকে জোর পূর্বক মুখে বিষ ঢেলে হত্যা করা হয়েছে বলে চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ পেয়ে চৌগাছা থানার পুলিশ শনিবার সকালে জান্নাতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে। চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজিব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে।

নিহতের পিতা অ্যাডভোকেট তাইয়েব আলী মোবাইল ফোনে জানান ইসমাইল প্রায়ই তার মেয়েকে নির্যাতন করত। এর আগেও সে একাধিকবার আমার মেয়েকে নির্যাতন করেছে। সে পরিকল্পিতভাবে সে আমার মেয়ের মুখে জোরপূর্বক বিষ (ঘাষ পোড়া পাওডার) খাইয়ে হত্যা করেছে।

ইসমাইল ও জান্নাতের পাবিরবারিক সুত্রে জানাযায় প্রায় ১৫ বছর পূর্বে তাদের বিবাহ হয়। বিয়ের পর ইসমাইল স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় থাকতেন। সেখানে একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানীতে চাকরি করতেন। পরে মোটরসাইকেল একসিডেন্টে তার পা ভেঙে গেলে সে গ্রামের বাড়িতে চলে আসে। ওই সূত্র জানায় বিবাহের পর থেকে তাদের দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকে। জান্নাত শহরের মেয়ে। শহরে থাকতেই সে স্বাচ্ছন্দ বোধ করতো। ইসমাইল বিয়ের পর তাকে ঢাকায় নিয়ে গেলেও অল্প কদিনেই একেবারে অজপাড়াগায়ে চলে আসে এবং স্ত্রীকে নির্যাতন করতো। এছাড়া সম্প্রতি ইসমাইলের চলাফেরা বেপরোয়া হয়ে পড়ে। এসব নিয়ে স্ত্রীর সাথে গোলমাল লেগেই থাকতো।
সূত্র জানায় তাদের বড় ছেলে ইমরান হোসেন ইশরাকের জন্মের পর জান্নাত পারিবারিক কোন্দলের কারনে বেশ কয়েক বছর নড়াইল বাবার বাড়িতে গিয়ে অবস্থান করে। সে সময় জান্নাতের পিতা ইসমাইলের নামে ২/৩ টি মামলা করেন। ৩/৪ বছর মামলা চলার পর সমঝোতার মাধ্যমে আবার তারা ঘরসংসার শুরু করেন। দুইমাস আগে তাদের আরেকটি ছেলের জন্ম হয়। এরপরও দাম্পত্য কোন্দলের নিরসন হয়নি।
ইসমাইল হোসেন জানান বৃহস্পতিবার ইফতারের পর আমি তিলকপুর বাজারে যাই। এ সময় আমার স্ত্রী আমার বড় ছেলে ৭ম শ্রেণির ছাত্র ইশরাকের কোলে ছোট ছেলে ইশানকে (২মাস) দিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘাস পোড়া ঔষধ খায়। ছেলের কান্নাকাটি ও চেঁচামেচিতে আমার মা বাবা ছুটে এসে ঘরের দরজার সিটকানি ভেঙ্গে তাকে উদ্ধার করে। আমি সংবাদ পেয়ে বাড়ি এসে তাকে চৌগাছা হাসপাতালে নিয়ে যায়। পারিবারিক কোন্দলের বিষয় এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন ঐদিন কোন গোলমাল হয়নি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *