LOADING

Type to search

কেশবপুরের হোম করোয়ারেন্টাইনে থাকা সেই দরিদ্র পরিবারটির ঘরে খাবার নেই

যশোর

কেশবপুরের হোম করোয়ারেন্টাইনে থাকা সেই দরিদ্র পরিবারটির ঘরে খাবার নেই

Share
জাহিদ আবেদীন বাবু, কেশবপুর (যশোর) থেকে।
 অভাগা যেদিকে তাকায় সেই দিকে যেন সাগর  শুকায়!  এমনি এক অবস্থা হয়েছে  যশোরের কেশবপুর উপজেলার গোপসেনা গ্রামের শাহিনের। শাহিন কিছু টাকা জোগাড় করে ৬ এপ্রিল ঢাকায় যায় কাজের সন্ধানে।  কিন্তু করোনা ভাইরাস  সৃষ্টি পরিস্থিতি জঠিল আকার ধারণ করায় তার আর কাজ জোটনি।  ফলে ভাগ্যহত শাহিন ৮ এপ্রিল বাড়ি ফিরে আসতে বাধ্য হয়। ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার এক দিন পর ১০ এপ্রিল রাত ৮ টার দিকে   সহকারী কমিশনার (ভুমি, আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত শাহিনীর বাড়িতে।  ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে ঘোরাঘুরি করার অভিযোগে উপজেলার সহকারী কমিশনার ( ভূমি)  ইরুফা সুলতানা ম্যাজিষ্ট্রেটের ক্ষমতাবলে মোবাইল কোটে দরিদ্র শাহিনকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করে। একই সঙ্গে তার পরিবারের সকলকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ প্রদান করা হয়। খাদ্য সংকটে থাকা শাহিনের ৫ সদস্যের পরিবারকে গত  ৬ দিনেও কোন খাদ্য সামগ্রীর ব্যবস্থা করা হয়নি।
জানা গেছে,  কেশবপুর শহর থেকে ১৫ কিঃ মিঃ দূরে সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের গোপসেনা গ্রামে অভাব অনাটনের মধ্যে বসবাস করে অানচার ঢালীর ছেলে শাহিনুর রহমান ঢালী (৩০)। বাবা, মা, স্ত্রী, শিশু সন্তানসহ ৫ সদস্য নিয়ে তার সংসার। তার বাবা, মা বার্ধক্যজনিত কারণে প্রায় সময় নানা অসুখ বিসুখে ভুগছেন । ফলে সংসারে অভাব অনাটন লেগেই থাকে। অভাবের তাড়নায় শাহিন গত ৬ এপ্রিল ঢাকায় যায় কাজের সন্ধানে। করোনা ভাইরাস সৃষ্ট পরিস্থিতে ঢাকায় কাজ না মেলায় তিনি গত ৮ এপ্রিল নিজ গ্রামে ফিরে আসেন। ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার খবর পৌঁছে যায় প্রশাসনের কাছে। গত ১০ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে কেশবপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইরুফা সুলতানাসহ অাইনশৃংখলা বাহিনী  উপস্থিত শাহিনীর বাড়িতে। বাড়ি ফিরে ঘুরাঘুরির করার অভিযোগে শাহিনকে দু’ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং শাহিনসহ পরিবারের ৫ সদস্যকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়। অভাব অনাটনের মধ্যে দু’ হাজার টাকা জরিমানা দেয়া শাহিনের জন্য মরার উপর খাড়ার ঘার মতো অবস্থা।  ফলে অভিযোগ থেকে বাচতে নানা চেষ্টা করে। কিন্তু কথায় আছে বিপদ যখন আসে চার দিক দিয়ে আসে। ফলে দরিদ্র শাহিনের কোন কথা আমলে আসেনি। তার কাকুতি মিনতি, আবেদন নিবেদনে বিচারকের মন না গলায় শত কষ্ট বুকে চেপে দু’ হাজার টাকা পরিশোধ করেন শাহিন। অভাবে থাকালেও প্রশাসনেন পক্ষ থেকে শাহিনের পরিবারের জন্য কোন খাদ্য সামগ্রীর ব্যবস্থা করা হয়নি।
এ ব্যাপারে শাহিন জানান, প্রশাসনের লোকজন আমার কাছ থেকে দু’ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে আমার ৫ সদস্যের পরিবারকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। শারীরিক ভাবে সম্পুর্ন সুস্থ দাবী করে শাহিন ক্ষোভের সহিত বলেন, ধার-দেনা, ঋণ করে সংসার চালাছি, তার মধ্যে আবার দু’ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হলো। তিনি আরও বলেন,  আইনের লোক আইনগত কাজ করে গেছে তাতে তার দুঃখ নেই, কিন্তু খাদ্য অভাব থাকায় ৩৩৩ নম্বরে কল করাসহ নানা জনের কাছে যোগাযোগ করেছি কিন্তু গত ৬ দিনেও কোনো খাদ্য সামগ্রী পায়নি।
এব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুৃমি) ইরুফা সুলতানা বলেন, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সামাজিক দূরাত্ত বজায় না রাখার দায়ে তাকে দু’ হাজার  জরিমানা করাসহ তার পরিবারকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেয় হয়েছে ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *